হিজল গাছের শহর

শহরে এখন হিজল দুলছে।
গুচ্ছ মতো হাল্কা ও নরম বেগুনী তার ফুল।
যেনো সড়কের দ্বীপ ধরে,
সোনালি পেট্রল আর-
নীল অকটেনের যান্ত্রীক ভুল।

শহুরে বাসের চাকায়,
পেন্সিল বঞ্চিত রাবার, আর-
মাংস পেষা গন্ধ।
ব্রেকে ব্রেকে চালকের অভিশাপে,
হেল্পারের নিষ্ঠুর হুঙ্কার।
মৃত্যুর কাছে দাসত্ব তাদের,
তাঁরা কুলাঙ্গার।
তাঁরা ড্রাইভিং সিটে একরোখা,
তাঁরা এক্সেলেটর চেপেই অন্ধ।

তুমি বলেছিলে, আমি কষ্ট দিলে, ঐ-
হিজল ফুলের মতো,
রঙ জমে তোমার নখের গোড়ায়।
ভীড় ঠেলা এই শহরে,
শব্দহীনতা তোমার মন পোড়ায়।
কষ্ট বাঁধতে শিখেছো তুমি,
দাঁড়কাকের ধূসর রঙের পাখা ছুঁয়ে।
চোখের জল তাতে চুইয়ে চুইয়ে,
ফাঙ্গাস জমে হৃদয়ে।
ভালোবাসায় রয়ে সয়ে।

আর শহুরে কষ্টে আমি দাঁড়কাক।
হিজলের ডালে ডালে,
লোক চক্ষুর আড়ালে,
উড়তে উড়তে তোমার বক্ষে খাই বাঁক।
বিকেল আর সন্ধ্যায় শুঁকনো-
মানুষের ঘরে ফেরা।
আমাদের স্বচ্ছ চোখে,
অক্লান্ত ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ঘেরা।
এই সামুদ্রিক জনগোষ্ঠীর,
হাজারো প্রশ্ন ও জেরা,
হিজল পাতার এই শহরে-
খাচ্ছে ঘুরপাক।

তোমাকে কষ্ট দেয়া,
তোমাকে না পাওয়ায়,
হারিয়ে গেছি বার বার।
শহর ভরা কষ্ট আমার, ঐ-
হিজল ফুলে মিশে থাক।
অবিচ্ছেদ্য ঋতু হয়ে,
পিচ গলা গন্ধ নিয়ে,
তোমার চোখেই ঝরে যাক।
শহর জুড়ে হিজল দুলছে।
আমি উড়ছি হয়ে দাঁড়কাক।